বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র এবং ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না বিজেপি। সোমবার (২৫ নভেম্বর) *দ্য ওয়াল* নামক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি চিন্ময়ের মুক্তি দাবি করেছে। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এমনকি হুমকি দিয়েছেন যে, যদি তাকে মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ সীমান্তে সনাতনীরা ওই এলাকা অবরোধ করবে এবং কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ঢাকার বিমানবন্দর এলাকা থেকে রাজধানীর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হেফাজতে নেয়। পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সেই রাতেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দাবি করেন যে, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার হিন্দুদের ওপর অত্যাচার করছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশ সরকার হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াই করা নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করেছে।
শুভেন্দু আরও বলেন, যদি সোমবার রাতের মধ্যে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু মুক্তি না পান, তাহলে সনাতনীরা আগামীকাল থেকে সীমান্ত অবরোধ শুরু করবে। তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে কোনো পরিষেবা বাংলাদেশে প্রবাহিত হতে দেবেন না।
এছাড়া শুভেন্দু কলকাতায় বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে টানা ঘেরাও কর্মসূচি পালনের হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যেভাবে অত্যাচার শুরু হয়েছে, তাতে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত এবং ব্যথিত। আর এই বিষয়টি আর সহ্য করা হবে না।”
উল্লেখযোগ্য যে, ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামে একটি সমাবেশ আয়োজন করে, যেখানে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস মুখপাত্র হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে।
৩০ অক্টোবর, চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ জাতীয় পতাকা অবমাননা করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। কোতোয়ালি থানায় ফিরোজ খান নামের এক ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করেন। এই ঘটনার সাথে জড়িত দুই জন, রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাস, ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে।
মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন: ইসকনের চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী, গোপাল দাস টিপু, ডা. কথক দাস, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাস, রাজীব দাস, কৃষ্ণ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে ববি, তুষার চক্রবর্তী রাজীব, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাস, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাস।
সম্প্রতি, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’ ব্যানারে কর্মসূচি শুরু করেছে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে।